শিরোনাম: যুক্তরাজ্যে রটওয়েলার চুরি বাড়ছে, বাড়ছে উদ্বেগ
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উন্নত বিশ্বে পোষ্য প্রাণী পালনের প্রবণতা বেড়েছে, যা অনেক মানুষের জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। তারা কেবল সঙ্গীই নয়, পরিবারের সদস্যের মতোই গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যমে কুকুর চুরি নিয়ে উদ্বেগজনক খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে রটওয়েলার নামক এক বিশেষ জাতের কুকুর চুরির ঘটনা বাড়ছে, যা কর্তৃপক্ষের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে যে, গত বছর দেশটিতে ১,৮০৮টি কুকুর চুরি হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি চুরি হওয়া কুকুরের জাত হলো ফ্রেঞ্চ বুলডগ। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, অন্যান্য কুকুরের চুরির সংখ্যা কমলেও রটওয়েলার চুরির ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। এক বছরে এই ধরনের কুকুরের চুরি বেড়েছে প্রায় ১৮০ শতাংশ। সাধারণত, রটওয়েলার শক্তিশালী এবং বিশাল আকৃতির হয়ে থাকে, যা গার্ড ডগ হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। বাজারে এদের ভালো দাম থাকার কারণেও অপরাধীরা এদের দিকে ঝুঁকছে। একটি রটওয়েলার শাবকের দাম প্রায় আড়াই হাজার পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার সমান।
কুকুর চুরি বিষয়ক এই ঘটনাগুলো পোষ্য মালিকদের জন্য গভীর মানসিক কষ্টের কারণ। কারণ, তারা তাদের প্রিয় সঙ্গীকে হারানোর তীব্র যন্ত্রণার শিকার হন। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, চুরি হওয়া কুকুরদের মধ্যে মাত্র এক-পঞ্চমাংশকে খুঁজে পাওয়া যায়। গত এক দশকে চুরি হওয়া প্রায় ২৩,৪৩০টি কুকুরের মধ্যে এই সামান্য সংখ্যক কুকুরকে উদ্ধার করা গেছে।
কুকুর চুরি কমাতে যুক্তরাজ্যে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গত বছর ‘পেট অ্যাবডাকশন অ্যাক্ট’ নামে একটি আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, যেখানে পোষ্য চুরিকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং দোষীদের পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনের কারণে সামগ্রিকভাবে কুকুর চুরির ঘটনা কিছুটা কমেছে, যদিও রটওয়েলারের ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে।
রটওয়েলার সাধারণত প্রভাবশালী এবং বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে একটি বিশেষ পরিচিতি বহন করে। অনেক সেলিব্রেটির কাছেও এই জাতের কুকুর দেখা যায়। ফলে, এদের চাহিদা বাজারে সবসময় থাকে। অপরাধীরা সম্ভবত এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে।
পোষ্য প্রাণী চুরি একটি গুরুতর সমস্যা, যা মালিকদের জীবনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে। যুক্তরাজ্যের এই পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের নাগরিকদেরও সচেতন হওয়া উচিত। কারণ, পোষ্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রতিটি মালিকের দায়িত্ব।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান