বর্তমানে, বিভিন্ন দেশে নাগরিকদের জন্য এমন কিছু সুযোগ থাকে, যেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখলে করের সুবিধা পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যে, এই ধরনের একটি জনপ্রিয় ব্যবস্থা হলো ‘ইন্ডিভিজুয়াল সেভিংস অ্যাকাউন্ট’ বা সংক্ষেপে ‘আইএসএ’।
যদিও এই প্রবন্ধটি যুক্তরাজ্যের প্রেক্ষাপটে লেখা, তবে এর মূল ধারণাটি হলো, কিভাবে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার সঞ্চয়কে বৃদ্ধি করা যায় এবং করের বোঝা কমানো যায়।
যদি আপনি আপনার সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছেন, তাহলে কিছু বিষয় মনে রাখা দরকার। প্রথমত, আপনার বর্তমান বিনিয়োগের পরিমাণ এবং করের সুবিধাগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন।
যুক্তরাজ্যে, প্রতি বছর আইএসএ-তে ২০,০০০ পাউন্ড পর্যন্ত জমা করার সুযোগ থাকে, যা বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে (ধরুন, প্রতি পাউন্ড ১৩০ টাকা) ২৬ লক্ষ টাকার বেশি হয়। এই হিসাবটি পরিবর্তনশীল, তাই বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী টাকার পরিমাণ যাচাই করে নেওয়া ভালো।
আপনার যদি ইতোমধ্যে কোনো আইএসএ অ্যাকাউন্ট থাকে, তবে সেটিতে আরও অর্থ যোগ করার সুযোগ রয়েছে। আপনি যদি এই বছর নতুন করে অ্যাকাউন্ট খুলে থাকেন, তবে এটি খুবই সহজ হবে।
তবে, পুরনো অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করার আগে সম্ভবত আপনাকে ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করতে হতে পারে। তারা হয়তো কিছু অতিরিক্ত ফর্ম পূরণ করতে বলতে পারে।
দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অফারগুলো ভালোভাবে যাচাই করুন। ক্যাশ আইএসএ-র ক্ষেত্রে, বাজারের সেরা অফারগুলো প্রায়ই পরিবর্তন হয়।
তাই, আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত অফার খুঁজে বের করতে বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট যেমন – The Private Office এবং Moneyfacts-এর মতো ওয়েবসাইটগুলো নিয়মিত দেখতে পারেন। এছাড়াও, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের ফান্ড বা পোর্টফোলিও অফার করে এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে বের করুন এবং তাদের চার্জগুলো তুলনা করুন।
যদি আপনি স্বল্প সময়ের জন্য বিনিয়োগ করতে চান, তাহলে আপনার বর্তমান ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অফারগুলোও দেখতে পারেন। অনেক সময়, এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলোতে দ্রুত অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ থাকে।
আপনার যদি এখনই বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা না থাকে, তাহলে আপনি ‘হোল্ডিং অ্যাকাউন্ট’ বা ‘ক্যাশ অ্যাকাউন্টে’ আপনার অর্থ জমা রাখতে পারেন। এই অ্যাকাউন্টে টাকা রাখলে, আপনি আপনার বিনিয়োগের জন্য সময় নিতে পারবেন এবং বাজারের পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
এছাড়াও, আপনার পুরনো আইএসএ অ্যাকাউন্টগুলোর দিকেও নজর রাখা উচিত। ক্যাশ আইএসএ-র ক্ষেত্রে, হয়তো আপনার বর্তমান সুদের হার বাজারের সেরা নাও হতে পারে।
তাই, অন্য কোনো ভালো অফার আছে কিনা, তা দেখে নেওয়া ভালো।
মনে রাখবেন, এই লেখাটি যুক্তরাজ্যের প্রেক্ষাপটে লেখা হয়েছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে, যেখানে করের সুবিধা পাওয়া যেতে পারে।
আপনার আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করার সময়, একজন অভিজ্ঞ আর্থিক উপদেষ্টার পরামর্শ নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হতে পারে।
তথ্যসূত্র: যুক্তরাজ্যে সঞ্চয় কৌশল বিষয়ক তথ্য অবলম্বনে।