কেনিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মধ্যে ডাচ রাজা উইলেম-আলেকজান্ডার এবং রানী ম্যাক্সিমার সফর ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগের মধ্যেই তাদের এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কেনিয়ার সরকার সমালোচকদের গ্রেপ্তার ও আটক করছে, বিশেষ করে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শনের কারণে।
সম্প্রতি, নতুন করের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভবনের একটি অংশে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করার অভিযোগে কিছু যুবককে অপহরণের সঙ্গেও সরকারের যোগসাজশের অভিযোগ উঠেছে। ডিসেম্বর মাসে অপহরণ ও গুমের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ায় বহু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডাচ রাজ পরিবারের কেনিয়া সফর বাতিলের জন্য change.org-এর একটি পিটিশনে ২০ হাজারের বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন। নেদারল্যান্ডসের সরকারও ৩০০টির বেশি ই-মেইল পেয়েছে, যেখানে এই সফর বাতিল করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তবে, নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী সোমবার রাতে ডাচ রাজ পরিবার কেনিয়ায় পৌঁছায়। তাদের সম্মানে ২১ বার তোপধ্বনি করা হয় এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।
তবে, কেনিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে রাজ পরিবারের সফর নিয়ে তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মাচারি মুনোনে এর কারণ হিসেবে দেশের মানুষের মধ্যে সরকারের প্রতি আস্থা কমে যাওয়াকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, “সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা কমে গেছে, কারণ স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো কাজ করছে না। কেনিয়ার কূটনৈতিক প্রভাবও কমে গেছে।”
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কেনিয়া ও নেদারল্যান্ডসকে মানবাধিকারের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার আহ্বান জানিয়েছে। তারা কেনিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর দ্রুত সমাধান এবং ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত অক্টোবরে কেনিয়া জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে নির্বাচিত হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এখন দেশটির সরকারকে নাগরিক অধিকারের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস