শুক্রবারে, শুক্র গ্রহটি পৃথিবী ও সূর্যের মাঝে অবস্থান করবে, যা একটি বিরল জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘটনা। একে বলা হয় ‘ইনফিরিয়র কনজাংশন’। তবে খালি চোখে এই দৃশ্য দেখা প্রায় অসম্ভব।
আকাশ পর্যবেক্ষকদের মতে, এই সময়ে শুক্র গ্রহটি পৃথিবী ও সূর্যের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করলেও সূর্যের তীব্র আলোর কারণে একে সাধারণ ভাবে দেখা যায় না। শিকাগোর অ্যাডলার প্ল্যানেটোরিয়ামের মিশেল নিকোলস-এর মতে, সূর্যের আলো এতটাই তীব্র থাকে যে, বিশেষ সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞ চোখ ছাড়া এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করা কঠিন।
আসলে, কনজাংশন হলো এমন একটি ঘটনা যখন দুটি মহাজাগতিক বস্তু আকাশে কাছাকাছি আসে। এই দুটি বস্তু হতে পারে দুটি গ্রহ, অথবা একটি গ্রহ ও সূর্য। শুক্র গ্রহের ‘ইনফিরিয়র কনজাংশন’ হয়, যখন শুক্র গ্রহটি সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে চলে আসে।
শুক্র ও পৃথিবীর সূর্যকে প্রদক্ষিণ করার কারণে, এই বিরল দৃশ্য প্রায় ১৯ মাস পর পর দেখা যায়। এই কনজাংশনের সময় হবে বাংলাদেশ সময় অনুযায়ী রাতের প্রায় ৭টা। জেমস ম্যাডিসন ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী গিয়ারি অ্যালব্রাইটের মতে, অনেক সময় এই ঘটনাকে ‘শুক্রের চুম্বন’ও বলা হয়, কারণ এসময় গ্রহ দুটি খুব কাছাকাছি আসে।
শুক্র গ্রহের দশাও চাঁদের মত পরিবর্তন হয়। কনজাংশনের আগে ও পরে শুক্র একটি সরু অর্ধচন্দ্রের মতো দেখায়, যদিও এটি কেবল দূরবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমেই দেখা সম্ভব। যারা এই পরিবর্তনের সাক্ষী থাকতে চান, তারা রবিবার সন্ধ্যাবেলায় দিগন্তের কাছে শুক্র গ্রহটিকে দেখতে পারেন।
এটি আকাশের উজ্জ্বলতম বস্তুগুলোর মধ্যে একটি হিসেবে দেখা যায়। কনজাংশনের পরে, শুক্রকে ভোরের আকাশে সূর্যোদয়ের ঠিক আগে দেখা যাবে। তবে সরাসরি সূর্যের দিকে তাকানো উচিত নয়।
যদিও এই ঘটনা সরাসরি দৃশ্যমান নাও হতে পারে, বিজ্ঞানীরা বলছেন এটি গ্রহদের মহাকাশে স্থান পরিবর্তনের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের একটি সুযোগ। মিশেল নিকোলস বলেন, “শুক্র গ্রহকে ভালোভাবে জানার একটি সুযোগ এটি”।
একটি বইয়ের একটি অধ্যায়ে এই ‘ইনফিরিয়র কনজাংশন’-এর বর্ণনা ছিল, যা পল ম্যাককার্টনির ‘দ্য কিস অফ ভেনাস’ গানটিকে অনুপ্রাণিত করেছিল। এছাড়াও, নাসা’র দুটি আসন্ন মিশনে শুক্র গ্রহের গঠন এবং কেন এটি পৃথিবীর থেকে এত আলাদা, তা অনুসন্ধান করা হবে।
তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস