প্রেম ও সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত: সম্পর্কের বাঁধন, বয়সের ব্যবধান আর ভালোবাসার গল্প।
সমাজের চোখে সম্পর্কগুলো নানা রঙে বাঁধা পড়ে। কারো প্রেম হয় বয়সে ছোট কারো বা আবার বড়দের সাথে। সম্পর্কের গভীরতা কোনো বয়স বা নিয়মের কাছে বাঁধা থাকে না, বরং এটি নির্ভর করে ভালোবাসার গভীরতা, বোঝাপড়া আর একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধার ওপর।
এমনই এক ব্যতিক্রমী প্রেমের গল্প শোনা যায়, যেখানে বয়সের ব্যবধান সত্ত্বেও ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন দু’জন মানুষ – ৪০ এর কোঠার গ্লেন এবং ৬০ এর কোঠার জোসেফিন।
গ্লেন, যিনি একসময় বিবাহিত জীবন অতিবাহিত করেছেন, তাঁর অতীতের দাম্পত্য জীবন ছিল নীরস এবং একঘেয়ে। বিবাহিত জীবনে যৌন সম্পর্ক ছিল যেন একটি বাধ্যবাধকতা, আনন্দের কোনো চিহ্ন ছিল না সেখানে।
পরবর্তীতে তিনি বিবাহবিচ্ছেদ করেন। এরপর তিনি তাঁর সহকর্মী জোসেফিনের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক শুরু করেন। জোসেফিন ছিলেন তাঁর ভালো বন্ধু।
নতুন করে সম্পর্কে জড়ানোর শুরুতে গ্লেন কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। আগের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে তিনি নতুন করে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন। তবে জোসেফিন ছিলেন আত্মবিশ্বাসী।
তিনি গ্লেনকে সাহস জুগিয়েছিলেন। জোসেফিন গ্লেনকে বুঝিয়েছিলেন, ভালোবাসার সম্পর্কে শারীরিক সম্পর্কের চেয়ে মানসিক শান্তি অনেক বেশি জরুরি। তাঁরা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং সম্পর্কের গভীরতা বাড়িয়েছেন।
গ্লেন ধীরে ধীরে তাঁর দ্বিধা কাটিয়ে ওঠেন এবং সম্পর্কের আনন্দ উপভোগ করতে শুরু করেন।
তাঁদের সম্পর্কের মাঝে বয়সের ব্যবধান একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় ছিল। জোসেফিনের বয়স যেখানে ৬০ এর বেশি, গ্লেনের বয়স সেখানে প্রায় অর্ধশতকের কাছাকাছি। সমাজের চোখে এই ব্যবধান অনেক সময় আলোচনার বিষয় হয়।
তবে তাঁদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি ছিল পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং গভীর ভালোবাসা। তাঁরা একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন এবং একসঙ্গে সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন।
তাঁদের সম্পর্কের গভীরতা এতটাই ছিল যে, তাঁরা তাঁদের ভবিষ্যৎ জীবনের পরিকল্পনা করতে শুরু করেন। স্কটল্যান্ডে একটি কুটির তৈরি করে একসাথে থাকার স্বপ্ন দেখতেন তাঁরা।
তাঁরা বিশ্বাস করতেন, ভালোবাসার কোনো বয়স নেই, ভালোবাসার কোনো সীমা নেই।
গল্পটি ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি প্রমাণ করে, সম্পর্কগুলো বয়সের গণ্ডিতে আবদ্ধ নয়, বরং ভালোবাসার গভীরতা, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং শ্রদ্ধাই একটি সম্পর্কের মূল ভিত্তি।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান