রেস্টুরেন্টের খাবার: ‘ডগি ব্যাগ’-এর দিন কি ফুরিয়ে আসছে?
পশ্চিমা বিশ্বে রেস্টুরেন্টের খাবার বাঁচিয়ে নেওয়ার প্রবণতা ধীরে ধীরে কমছে। একসময় ‘ডগি ব্যাগ’-এর চল ছিল বেশ, যেখানে গ্রাহকরা খাবার টেবিলে রেখে যাওয়া অতিরিক্ত খাবার বাড়ি নিয়ে যেতে পারতেন।
কিন্তু বর্তমানে এই ধারণাটি জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এই প্রবণতা কমছে।
এই পরিবর্তনের পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের আকার অনেক বড় থাকে, যা একজন মানুষের পক্ষে খাওয়া সম্ভব হয় না।
দ্বিতীয়ত, অনেক সময় খাবার বাঁচিয়ে নেওয়ার মধ্যে একটা সামাজিক অস্বস্তি কাজ করে। অনেকে মনে করেন, এটা ‘রোমান্টিক’ নয়।
রেস্টুরেন্টের সুন্দর পরিবেশ, আলো এবং খাবারের স্বাদ—এগুলোর সঙ্গে ঠান্ডা, বাসি খাবার নিয়ে আসার ধারণাটা মেলে না।
তবে, খাদ্য অপচয় একটি গুরুতর সমস্যা। বিশ্বে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ খাবার নষ্ট হয়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।
আমেরিকায় একজন ব্যক্তি বছরে প্রায় ২৪ কেজি খাবার ফেলে দেন, যার আর্থিক মূল্য প্রায় সাড়ে ২৯ হাজার টাকার বেশি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার নষ্ট হওয়া কমাতে ‘ডগি ব্যাগ’-এর ধারণাটিকে পুনরায় জনপ্রিয় করা যেতে পারে। এমনকি ফ্রান্সের মতো দেশেও এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা চলছে, যেখানে ‘ডগি ব্যাগ’-এর জন্য কোনো ফরাসি শব্দ নেই।
বাংলাদেশে সম্ভবত রেস্টুরেন্টের খাবার বাঁচিয়ে নেওয়ার চল পশ্চিমা বিশ্বের মতো ততটা দেখা যায় না। এর কারণ হতে পারে খাবারের ভিন্নতা, পরিবেশ এবং সংস্কৃতি।
আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের দাম তুলনামূলকভাবে কম থাকে। ফলে অনেকেই হয়তো খাবার নষ্ট হওয়ার বিষয়টি সেভাবে গুরুত্ব দেন না।
এছাড়াও, রাস্তায় সহজলভ্য খাবারের কারণেও অনেকে হয়তো রেস্টুরেন্টের খাবার বাড়িতে নিতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না।
তবে, খাদ্য অপচয় একটি বৈশ্বিক সমস্যা। আমাদের প্রত্যেকেরই এই বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত।
রেস্টুরেন্টগুলো যদি খাবারের পরিমাণ কমিয়ে পরিবেশন করে, তাহলে হয়তো অনেক খাবার নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচানো যেতে পারে। অথবা, গ্রাহকদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে উদ্বৃত্ত খাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: The Guardian